Articles

আল-কুরআনের সংক্ষিপ্ত তাফসীর: ৩য় পর্ব





[সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৮৩-১৪১]





التفسير الموجز للقرآن الكريم: الجزء الثالث





سورة البقرة: الآيات (141-83)








কতিপয় উলামা








সম্পাদক: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী





مراجعة: د/ محمد منظور إلهي





আল-কুরআনের সংক্ষিপ্ত তাফসীর: ৩য় পর্ব





সূরা আল-বাকারা





৮৩ আয়াত থেকে ১৪১ আয়াত পর্যন্ত অর্থসহ সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা





اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ





بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ





আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই অভিশপ্ত শয়তান থেকে; পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে শুরু করছি।





﴿وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِيثَٰقَ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ لَا تَعۡبُدُونَ إِلَّا ٱللَّهَ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَانٗا وَذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡيَتَٰمَىٰ وَٱلۡمَسَٰكِينِ وَقُولُواْ لِلنَّاسِ حُسۡنٗا وَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواْ ٱلزَّكَوٰةَ ثُمَّ تَوَلَّيۡتُمۡ إِلَّا قَلِيلٗا مِّنكُمۡ وَأَنتُم مُّعۡرِضُونَ ٨٣ ﴾ [البقرة: ٨٣]





৮৩. আর স্মরণ কর, যখন আমরা বনী ইসরাঈলের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না, সদাচার করবে পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম ও মিসকীনদের সাথে। আর মানুষকে উত্তম কথা বল,১০৮ সালাত কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর। অতঃপর তোমাদের মধ্য থেকে স্বল্প সংখ্যক ছাড়া১০৯ তোমরা ফিরে গেলে। আর তোমরা (স্বীকার করে অতঃপর তা থেকে) বিমুখ হও।





১০৮. এখানে রয়েছে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশে ইবাদাতের সকল অনুভূতি, তা বাস্তবায়ন করার তাগিদ, মাতা-পিতার প্রতি সদাচার, আত্মীয়-পরিজন, ইয়াতীম, অসহায়দের সাথে উত্তম ব্যবহার এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সাথে সদাচার, নম্র ব্যবহার ও ভালো কথা বলার তাগিদ; তবে সদাচারের অজুহাতে কারও ক্ষেত্রেই দীনের ব্যাপারে ছাড় দেওয়া যাবে না। এমনকী কেউ ফিরআউন তুল্য হলেও বিনম্র ভাষায় দীনের আদর্শ প্রচারে সর্বাত্মক সাধনা চালিয়ে যেতে হবে। প্রয়োগ করতে হবে তাকে বুঝাতে সকল পথ ও পদ্ধতি।





১০৯. এরা তাওরাতের একনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন এবং আল্লাহ তাদেরকে সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত রেখেছিলেন।





﴿وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِيثَٰقَكُمۡ لَا تَسۡفِكُونَ دِمَآءَكُمۡ وَلَا تُخۡرِجُونَ أَنفُسَكُم مِّن دِيَٰرِكُمۡ ثُمَّ أَقۡرَرۡتُمۡ وَأَنتُمۡ تَشۡهَدُونَ ٨٤﴾ [البقرة: ٨٤]





৮৪. আর যখন আমি তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম যে, তোমরা নিজদের রক্ত প্রবাহিত করবে না এবং নিজদেরকে তোমাদের গৃহসমূহ থেকে বের করবে না। অতঃপর তোমরা স্বীকার করে নিলে। আর তোমরা তার সাক্ষ্য প্রদান করছিলে।





১০০. মানব হত্যা আসমানী ধর্মে নিষিদ্ধ। বনী ইসরাঈলদের কাছ থেকেও আল্লাহ তা‘আলা মানব হত্যা না করার অঙ্গিকার নিয়েছিলেন। কেবল যুদ্ধের ময়দানে যতটুকু না হলেই নয় এবং শরী‘আতের বিধান মোতাবেক কিসাস ও হুদূদ বাস্তবায়নের জন্যই, সীমিত ক্ষেত্রে, রক্তপাতের বৈধতা রয়েছে।





﴿ثُمَّ أَنتُمۡ هَٰٓؤُلَآءِ تَقۡتُلُونَ أَنفُسَكُمۡ وَتُخۡرِجُونَ فَرِيقٗا مِّنكُم مِّن دِيَٰرِهِمۡ تَظَٰهَرُونَ عَلَيۡهِم بِٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِ وَإِن يَأۡتُوكُمۡ أُسَٰرَىٰ تُفَٰدُوهُمۡ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيۡكُمۡ إِخۡرَاجُهُمۡۚ أَفَتُؤۡمِنُونَ بِبَعۡضِ ٱلۡكِتَٰبِ وَتَكۡفُرُونَ بِبَعۡضٖۚ فَمَا جَزَآءُ مَن يَفۡعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمۡ إِلَّا خِزۡيٞ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۖ وَيَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰٓ أَشَدِّ ٱلۡعَذَابِۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَٰفِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُونَ ٨٥﴾ [البقرة: ٨٥]





৮৫. অতঃপর তোমরাই তো তারা, যারা নিজদেরকে হত্যা করছ এবং তোমাদের মধ্য থেকে একটি দলকে তাদের গৃহ থেকে বের করে দিচ্ছ; পাপ ও সমীলঙ্ঘনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে সহায়তা করছ। আর তারা যদি বন্দী হয়ে তোমাদের নিকট আসে, তোমরা মুক্তিপণ দিয়ে তাদেরকে মুক্ত কর। অথচ তাদেরকে বের করা তোমাদের জন্য হারাম ছিল।১১০ তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী প্রতিদান হতে পারে? দুনিয়ার জীবনে। আর কিয়ামতের দিনে তাদেরকে কঠিনতম আযাবে নিক্ষেপ করা হবে।১১১ আর তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফিল নন।





১১০. এ ব্যাপারটি বুঝতে একটু ধৈর্য্যের সাথে তৎকালীন প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা নেওয়া দরকার। মদীনার আওস ও খাযরাজ নামে দু’টি গোত্র পরস্পর শত্রু ছিল, তাই তাদের মধ্যে যুদ্ধ লেগেই থাকত। মদীনার উপকণ্ঠে বাস করত বনী কুরায়যা ও বনী নাযীর নামের দু’টি ইয়াহূদী গোত্র। বনী কুরায়যা ছিল আওস গোত্রের মিত্র; অপরদিকে খাযরাজ গোত্রের মিত্র ছিল বনী নাযীর।





বনী কুরায়যার লোকদেরকে হত্যা ও বহিষ্কার করার পেছনে খাযরাজ গোত্রের মিত্র বনী নাযীরের সক্রিয় ভূমিকা থাকত। অনুরূপভাবে বনী নাযীরকে হত্যা ও বহিষ্কারে ইন্ধন যোগাতো আওস গোত্রের মিত্র বনী কুরায়যা। তবে একটি ব্যাপারে উভয় ইয়াহূদী গোত্র ছিল এক ও অভিন্ন। তাহল, ইয়াহূদী গোত্রদ্বয়ের কেউ যদি অন্য গোত্রের কারো হাতে বন্দী হতো, তাহলে নিজ মিত্রদের অর্থে তাকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নিত। কেউ এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তারা বলত, বন্দী মুক্তকরণ আমাদের ওপর ওয়াজিব। আবার আরব গোত্রদ্বয়ের পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহায্য করার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তারা বলত, মিত্রদের সাহায্য করা থেকে বিরত থাকা লজ্জার ব্যাপার!





তাই এ-আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের এ-দ্বিমুখী আচরণের নিন্দা করেছেন এবং খুলে দিয়েছেন তাদের ঘৃণ্য কূট-কৌশলের মুখোশ।





১১১. এ-হল সর্বকালের সর্বযুগের মানবগোষ্ঠির জন্যে আসমানী বিধান। অর্থাৎ যারা কিতাবের সুবিধাজনক অংশগুলোকে বিশ্বাস করে ও মানে, আর নিজেদের তথাকথিত দুনিয়াবী স্বার্থের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলোকে ছল-চাতুরীর মাধ্যমে অথবা স্পষ্টভাবে অবিশ্বাস ও অমান্যে করে, তাদের পরিণতি হলো কঠিনতম আযাব যাতে তারা নিক্ষিপ্ত হবে।





﴿أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ ٱشۡتَرَوُاْ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا بِٱلۡأٓخِرَةِۖ فَلَا يُخَفَّفُ عَنۡهُمُ ٱلۡعَذَابُ وَلَا هُمۡ يُنصَرُونَ ٨٦﴾ [البقرة: ٨٦]





৮৬. তারা আখিরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবনকে খরিদ করেছে।১১২ সুতরাং তাদের থেকে আযাব হালকা করা হবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।





১১২. অথচ যা হওয়া উচিৎ, তা মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন এভাবে: নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জান-মাল জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন। দেখুন: সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত ১১১।





﴿وَلَقَدۡ ءَاتَيۡنَا مُوسَى ٱلۡكِتَٰبَ وَقَفَّيۡنَا مِنۢ بَعۡدِهِۦ بِٱلرُّسُلِۖ وَءَاتَيۡنَا عِيسَى ٱبۡنَ مَرۡيَمَ ٱلۡبَيِّنَٰتِ وَأَيَّدۡنَٰهُ بِرُوحِ ٱلۡقُدُسِۗ أَفَكُلَّمَا جَآءَكُمۡ رَسُولُۢ بِمَا لَا تَهۡوَىٰٓ أَنفُسُكُمُ ٱسۡتَكۡبَرۡتُمۡ فَفَرِيقٗا كَذَّبۡتُمۡ وَفَرِيقٗا تَقۡتُلُونَ ٨٧ ﴾ [البقرة: ٨٧]





৮৭. আর আমরা নিশ্চয় মূসাকে কিতাব দিয়েছি এবং তার পরে একের পর এক রাসূল প্রেরণ করেছি এবং মারইয়াম পুত্র ঈসাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ।১১৩ আর তাকে শক্তিশালী করেছি পবিত্র আত্মার১১৪ মাধ্যমে। তবে কি তোমাদের নিকট যখনই কোনো রাসূল এমন কিছু নিয়ে এসেছে, যা তোমাদের মনঃপূত নয়, তখন তোমরা অহঙ্কার করেছ, অতঃপর (নবীদের) একদলকে তোমরা মিথ্যাবাদী বলেছ আর একদলকে হত্যা করেছ।





১১৩. ‘সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী’র দ্বারা সেই উজ্জ্বল আলামত ও চিহ্নগুলোকে বুঝানো হয়েছে, যা দেখে প্রতিটি সত্যপ্রিয় ও সত্যানুসন্ধিৎসু মানুষ ঈসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহর নবী হিসেবে চিনতে পারে।





১১৪. ‘পবিত্র রূহ’ বলতে এখানে জিবরীল আলাইহিস সালামকে বুঝানো হয়েছে।





﴿وَقَالُواْ قُلُوبُنَا غُلۡفُۢ ۚ بَل لَّعَنَهُمُ ٱللَّهُ بِكُفۡرِهِمۡ فَقَلِيلٗا مَّا يُؤۡمِنُونَ ٨٨ ﴾ [البقرة: ٨٨]





৮৮. আর তারা বলল, আমাদের অন্তরসমূহ আচ্ছাদিত; ১১৫ বরং তাদের কুফুরীর কারণে আল্লাহ তাদেরকে লা‘নত করেছেন। অতঃপর তারা খুব কমই ঈমান আনে।১১৬





১১৫. ইয়াহূদীরা বুঝাতে চায় যে, তাদের অন্তরগুলো দৃঢ় আচ্ছাদন দিয়ে সুরক্ষিত; তা পরিবর্তনের জন্যে কোনো যুক্তি বা প্রমাণ -এমন কি আল্লাহর আয়াতসমূহের বক্তব্যের আলোকে চেষ্টা করলেও তাতে কোনো প্রভাব পড়ে না। এটি তাদের নিরেট একগুঁয়েমি, অজ্ঞতা, মুর্খতা ও বিদ্বেষপ্রসুত একধরণের হঠকারী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। বস্তুতঃ তারা তাদের কিতাবে উল্লিখিত পরবর্তী নবী আগমনের পূর্বাভাষ অনুযায়ী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সুস্পষ্টভাবে চিনতে পেরেও সচেতনভাবে তাঁকে অস্বীকার করেছে।





এছাড়া বর্তমান বিকৃত তাওরাত ও বাইবেলের কয়েকটি উদ্ধৃতি হুবহু এখানে তুলে দেওয়া হলো যেখানে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন বিষয়ে ভবিষ্যৎবাণী রয়েছে:





প্রকৃত ও নকল নবী





১৮আমি ওদের জন্য ওদের ভাইদের মধ্য থেকে তোমার মতো এক নবীর উদ্ভব ঘটাব ও তার মুখে আমার বাণী রেখে দেব; আমি তাকে যা কিছু আজ্ঞা করব, তা সে তাদের বলবে।১৯ আর আমার নামে সে আমার যে সকল বাণী বলবে, সেই বাণীতে কেউ যদি কান না দেয়, তবে তার কাছে আমি জবাবদিহি চাইব।





তাওরাত: দ্বিতীয় বিবরণ, অধ্যায় ১৮, শ্লোক ১৮-১৯








বিদায় উপদেশ





সহায়ক পবিত্র আত্মার আগমন, শিষ্যদের আনন্দ





৫এখন কিন্তু আমি তাঁরই কাছে যাচ্ছি যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, অথচ তোমাদের কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করছে না, আপনি কোথায় যাচ্ছেন? ৬কিন্তু এ সমস্ত তোমাদের বলেছি বিধায়ই তোমাদের মন দুঃখে ভরে গেছে। ৭তা সত্ত্বেও আমি তোমাদের সত্যকথা বলছি: আমার চলে যাওয়াটা তোমাদের পক্ষে ভালো। কারণ, আমি চলে না গেলে সেই সহায়ক তোমাদের কাছে আসবেন না; বরং যদি যাই, তাহলে আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠাব ৮আর তিনি এসে জগৎকে পাপের বিষয়ে দোষী বলে সাব্যস্ত করবেন, (এবং ব্যক্ত করবেন)





ধর্মময়তা ও বিচার কী।





১২তোমাদের কাছে আমার আরও অনেক কিছু বলার আছে, কিন্তু তোমরা এখন তা সহ্য করতে পার না। ১৩তবে তিনি যখন আসবেন, সেই সত্যময় আত্মা, তিনিই পূর্ণ সত্যের মধ্যে তোমাদের চালনা করবেন। কারণ, তিনি নিজে থেকে কিছুই বলবেন না; কিন্তু যে সমস্ত কথা শোনেন, তিনি তা-ই বলবেন; যা যা ঘটবার, তাও তিনি তোমাদের বলে দেবেন। ১৪তিনি আমাকে গৌরবান্বিত করবেন, কারণ যা আমার, তা-ই তুলে নিয়ে তিনি তা তোমাদের বলে দেবেন।





বাইবেল: যোহন-রচিত সুসমাচার, অধ্যায় ১৬, শ্লোক ৫-৮ এবং ১২-১৪





১১৬. অর্থাৎ ইয়াহূদীরা তাদের গর্ব-অহংকারের কারণে মনে করে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্য এমনই যে, তা কোনো জ্ঞানী লোকের অন্তরে প্রবেশ করতে পারে না; অথচ প্রকৃত ব্যাপার এর সম্পূর্ণ বিপরীত। নিঃসন্দেহে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপস্থাপনা পুরোপুরি অহী-ভিত্তিক, অত্যন্ত সারগর্ভ ও হৃদয়গ্রাহী। কিন্তু তাদের কুফুরী ও হঠকারিতার ফলে মহান আল্লাহ তাদের অন্তরের উপর অভিশম্পাত বর্ষণ করেছেন, আর তাই কোনো যুক্তিপূর্ণ ও জ্ঞানময় কথা মনে-প্রাণে গ্রহণ করার কোনো যোগ্যতাই তাদের আর অবশিষ্ট নেই।





﴿وَلَمَّا جَآءَهُمۡ كِتَٰبٞ مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِ مُصَدِّقٞ لِّمَا مَعَهُمۡ وَكَانُواْ مِن قَبۡلُ يَسۡتَفۡتِحُونَ عَلَى ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ فَلَمَّا جَآءَهُم مَّا عَرَفُواْ كَفَرُواْ بِهِۦۚ فَلَعۡنَةُ ٱللَّهِ عَلَى ٱلۡكَٰفِرِينَ ٨٩ ﴾ [البقرة: ٨٩]





৮৯. আর যখন তাদের কাছে, তাদের সাথে যা আছে, আল্লাহর পক্ষ থেকে তার সত্যায়নকারী১১৭ কিতাব আসলো, আর তারা (এর মাধ্যমে) পূর্বে কাফিরদের ওপর বিজয় কমনা করত।১১৮ সুতরাং যখন তাদের নিকট আসল যা তারা চিনত১১৯ তখন তারা তা অস্বীকার করল। অতএব, কাফিরদের ওপর আল্লাহর লা‘নত।





১১৭. কুরআন মাজীদকে তাওরাতের ‘মুসাদ্দিক’ বা সত্যায়নকারী এজন্য বলা হয়েছে যে, তাওরাতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাব এবং কুরআন নাযিল সম্পর্কে যেসব ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, কুরআনের মাধ্যমে সেগুলোর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাওরাতকে যারা মানে, তারা কিছুতেই কুরআন অমান্যকারী হতে পারে না। কেননা কুরআন মাজীদকে অস্বীকার করা প্রকারান্তরে তাওরাতকে অমান্য করার নামান্তর। এ ছাড়া তাওরাতের অবিকৃত অংশগুলো আল্লাহর অহী হওয়ার বিষয়টিও কুরআন সত্যায়ন করেছে। তবে আল কুরআনের পর কেবল আল-কুরআন অনুযায়ী আমল হবে।





১১৮. মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাবের পূর্বে ইয়াহূদীরা অস্থিরতার সাথে তাঁর আগমনের প্রতীক্ষায় ছিল। কারণ তাদের নবীগণ সর্বশেষ নবীর আগমন সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এবং তারা এ মর্মে আল্লাহর কাছে দো‘আও করতেন যে, শেষ নবীর আগমন যেন তাড়াতাড়ি হয়, তাহলে কাফিরদের প্রভাব-প্রতিপত্তি খর্ব হবে এবং পুণরায় তাদের উত্থানের যুগ শুরু হবে।





মদীনাবাসীগণ এ-কথার সাক্ষী যে, তাদের প্রতিবেশী ইয়াহূদীরা প্রায়শই বলে বেড়াত যে, ‘তোমাদের যার যার মন চায় আমাদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে যাও, আখেরী নবী যখন আসবেন, তখন আমরা সেসব অত্যাচারীদের দেখে ছাড়ব’। মদীনার অধিবাসীগণ এসব কথা শুনতেন এবং তাই যখন তাঁরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্মন্ধে অবগত হলেন, তখন তাঁরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতেন, দেখো! ইয়াহূদীরা যেন আমাদের আগে এ নবীর দীন গ্রহণ করে বাজিতে জিতে না যায়! চলো, আমরাই প্রথমে এ নবীর উপর ঈমান আনি; কিন্তু তাদের কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, যে ইয়াহূদীরা এতদিন নবীর আগমনের প্রতীক্ষায় দিন গুণত, তারাই সে নবীর আবির্ভাব হবার পর তাঁর সবচে’ বড় শত্রুতে পরিণত হলো!





১১৯. এর অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। এখানে একটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ঘটনা উল্লেখ করা হলো। আর তা তুলে ধরেছেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহধর্মিনী উম্মুল মুমিনীন সাফিয়াহ রাদিয়াল্লাহু আনহা। তিনি নিজে ছিলেন মদীনার উত্তরাঞ্চলের বিখ্যাত ইয়াহূদী গোত্র বনী নাযীরের নেতৃস্থানীয় এক আলেম হুয়ায় ইবন আখতাব-এর মেয়ে এবং আরেকজন বড় মাপের ইয়াহূদী আলেমের ভ্রাতুষ্পুত্রী। তিনি তার ইসলাম গ্রহণের আগের এ ঘটনাটি এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মদীনায় আগমনের পর আমার বাবা ও চাচা দু’জনই তাঁর সাথে সাক্ষাত করতে গিয়েছিলেন। দীর্ঘক্ষণ তাঁর সাথে কথাবার্তা বলার পর তারা ঘরে ফিরে আসেন। এ সময় আমি নিজের কানে তাদেরকে এভাবে আলাপ করতে শুনি:





চাচা: আমাদের কিতাবে যে নবীর খবর দেওয়া হয়েছে, ইনি কি সত্যিই সেই নবী?





পিতা: আল্লাহর কসম, ইনিই সেই নবী!





চাচা: এ ব্যাপারে তুমি কি একেবারে নিশ্চিত?





পিতা: হ্যাঁ।





চাচা: তাহলে এখন কি করতে চাও?





পিতা: যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে, এর বিরোধিতা করে যাব। একে সফলকাম হতে দেব না।





(সূত্র: সীরাতে ইবন হিশাম, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৬৫, আধুনিক সংস্করণ)





﴿بِئۡسَمَا ٱشۡتَرَوۡاْ بِهِۦٓ أَنفُسَهُمۡ أَن يَكۡفُرُواْ بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ بَغۡيًا أَن يُنَزِّلَ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ عَلَىٰ مَن يَشَآءُ مِنۡ عِبَادِهِۦۖ فَبَآءُو بِغَضَبٍ عَلَىٰ غَضَبٖۚ وَلِلۡكَٰفِرِينَ عَذَابٞ مُّهِينٞ ٩٠ ﴾ [البقرة: ٩٠]





৯০. যার বিনিময়ে তারা নিজদেরকে বিক্রয় করেছে১২০ তা কত জঘন্য (তা এই) যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা তারা অস্বীকার করেছে এই জিদের বশবর্তী হয়ে যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা তার ওপর তাঁর অনুগ্রহ নাযিল করেছেন।১২১ সুতরাং তারা ক্রোধের ওপর ক্রোধের উপযুক্ত হয়ে গেল। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব।১২২





১২০. অর্থাৎ নিজেদের কল্যাণ, শুভ পরিণাম ও পরকালীন মুক্তিকে জলাঞ্জলি দিয়েছে।





১২১. ইয়াহূদীদের আশা ছিল যে, শেষনবী তাদের অর্থাৎ ইসরাঈল বংশে জন্মগ্রহণ করবেন; কিন্তু যখন তিনি বনী ইসরাঈলের বাইরে ইসমাঈলী বংশধারায় প্রেরিত হলেন, যাদেরকে তারা নিজেদের মোকাবিলায় তুচ্ছ-জ্ঞান করত, তখন তারা তাঁকে শুধুমাত্র তাদের একগুঁয়েমি ও হঠকারি মানসিকতার কারণে অস্বীকার করতে উদ্যত হলো। তাদের মনোভাব এমনই যেন, আল্লাহ তাদেরকে জিজ্ঞেস করে নবী পাঠালেন না কেন! আল্লাহ যখন তাদেরকে জিজ্ঞেস না করে নিজের অনুগ্রহে নিজ পছন্দ অনুযায়ী নবী পাঠালেন, তখন তারা বিগড়ে গিয়ে তাঁকে সুস্পষ্টভাবে চিনতে পেরেও সর্বাত্মক বিরোধিতা করতে শুরু করে।





১২২. ‘লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি’ কাফিরদের জন্যেই নির্দিষ্ট। যারা ঈমানদার, তবে গুনাহগার (দয়াময় আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন) আর যদি তিনি তাদেরকে শাস্তি দেন, তবে তা হবে তাদের পাপমুক্ত করার লক্ষ্যে, লাঞ্ছিত করার উদ্দেশ্যে নয়।





﴿وَإِذَا قِيلَ لَهُمۡ ءَامِنُواْ بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ قَالُواْ نُؤۡمِنُ بِمَآ أُنزِلَ عَلَيۡنَا وَيَكۡفُرُونَ بِمَا وَرَآءَهُۥ وَهُوَ ٱلۡحَقُّ مُصَدِّقٗا لِّمَا مَعَهُمۡۗ قُلۡ فَلِمَ تَقۡتُلُونَ أَنۢبِيَآءَ ٱللَّهِ مِن قَبۡلُ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ٩١ ﴾ [البقرة: ٩١]





৯১. আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তোমরা তার প্রতি ঈমান আন’। তারা বলে, ‘আমাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে আমরা তা বিশ্বাস করি’। আর এর বাইরে যা আছে তারা তা অস্বীকার করে।১২৩ অথচ তা সত্য, তাদের সাথে যা আছে তার সত্যায়নকারী। বল, ‘তবে কেন তোমরা আল্লাহর নবীদেরকে পূর্বে হত্যা করতে, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক’?





১২৩. এখানে ইয়াহূদীদের উদ্ধৃত বক্তব্যে রয়েছে কুফর ও তাদের অন্তরের হিংসা-বিদ্বেষের প্রমাণ। যেসব আসমানী কিতাব তাদের প্রতি নাযিল হয় নি, সেগুলোকে অস্বীকার করে তারা কুফুরী করেছে। যেমন, আমাদের ঈমানের একটি অন্যতম শর্ত হলো, পূর্ববর্তী সব আসমানী কিতাবসমূহের ওপর বিশ্বাস (দেখুন: সূরা আল-বাকারা, আয়াত ৪)।





এখানে আল্লাহ তা‘আলা তাদের সামনে নিম্নোক্ত যুক্তিগুলো তুলে ধরেছেন:





ক. অন্যান্য গ্রন্থের সত্যতার অকাট্য যুক্তি থাকা সত্ত্বেও সেগুলো অস্বীকার করার কোনো কারণ থাকতে পারে না।





খ. কুরআন মাজীদও অন্যান্য আসমানী কিতাবের অন্তর্ভুক্ত একটি কিতাব। এটা তাওরাতের সত্যায়নকারীও বটে। তাই কুরআন মাজীদকে অস্বীকার করা তাওরাতকে অস্বীকার করার নামান্তর।





গ. সব আসমানী কিতাব মতেই মহান নবী-রাসূলদেরকে হত্যা করা কুফুরী। ইয়াহূদীরা নবীদেরকে হত্যা করেছে, অথচ তাঁরা, বিশেষ করে, তাওরাতের শিক্ষাই প্রচার করতেন। তাই আসলে তাদের তাওরাতের উপর ঈমান আনার দাবীটাই অসার।





﴿وَلَقَدۡ جَآءَكُم مُّوسَىٰ بِٱلۡبَيِّنَٰتِ ثُمَّ ٱتَّخَذۡتُمُ ٱلۡعِجۡلَ مِنۢ بَعۡدِهِۦ وَأَنتُمۡ ظَٰلِمُونَ ٩٢ ﴾ [البقرة: ٩٢]





৯২. আর অবশ্যই মূসা তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছে১২৪! অতঃপর তোমরা তার পরে বাছুরকে (উপাস্যরূপে) গ্রহণ করলে। আর তোমরা তো যালিম।





১২৪. মূসা আলাইহিস সালামকে মহান আল্লাহ তা‘আলা ৯টি সুস্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলেন। মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘আমি মূসাকে নয়টি প্রকাশ্য নিদর্শন দান করেছি’ (দেখুন: সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত ১০১)। এগুলোর বর্ণনা রয়েছে সূরা আল-আ‘রাফ ও সূরা আয-যুখরুফ-এ।





﴿وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِيثَٰقَكُمۡ وَرَفَعۡنَا فَوۡقَكُمُ ٱلطُّورَ خُذُواْ مَآ ءَاتَيۡنَٰكُم بِقُوَّةٖ وَٱسۡمَعُواْۖ قَالُواْ سَمِعۡنَا وَعَصَيۡنَا وَأُشۡرِبُواْ فِي قُلُوبِهِمُ ٱلۡعِجۡلَ بِكُفۡرِهِمۡۚ قُلۡ بِئۡسَمَا يَأۡمُرُكُم بِهِۦٓ إِيمَٰنُكُمۡ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ٩٣ ﴾ [البقرة: ٩٣]





৯৩. আর স্মরণ কর, যখন আমরা তোমাদের প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছিলাম এবং তোমাদের উপর তূরকে উঠিয়েছিলাম, (বলেছিলাম) ‘আমরা তোমাদেরকে যা দিয়েছি তা শক্তভাবে ধর এবং শোন’। তারা বলেছিল, ‘আমরা শুনলাম এবং অমান্য করলাম১২৬! আর তাদের কুফুরীর কারণে তাদের অন্তরে পান করানো হয়েছিল গো বাছুরের প্রতি আকর্ষণ। বল, ‘তোমাদের ঈমান যার নির্দেশ দেয় কত মন্দ তা! যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক’।





১২৬. অথচ মুমিনের বক্তব্য হওয়া উচিৎ: আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। ‘আমরা শুনলাম এবং অমান্য করলাম’ এ-ধরনের কথা আল্লাহর প্রতি ধৃষ্টতা প্রদর্শনকারী কাফেররাই কেবল বলতে পারে।





﴿قُلۡ إِن كَانَتۡ لَكُمُ ٱلدَّارُ ٱلۡأٓخِرَةُ عِندَ ٱللَّهِ خَالِصَةٗ مِّن دُونِ ٱلنَّاسِ فَتَمَنَّوُاْ ٱلۡمَوۡتَ إِن كُنتُمۡ صَٰدِقِينَ ٩٤ ﴾ [البقرة: ٩٤]





৯৪. বল, ‘যদি আল্লাহর নিকট আখিরাতের আবাস তোমাদের জন্যই নির্দিষ্ট থাকে অন্যান্য মানুষ ছাড়া। তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর১২৭, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক’।





১২৭. ইয়াহূদীদের দুনিয়া-প্রীতির প্রতি এটি সূক্ষ্ম বিদ্রুপ বিশেষ। আখিরাতের জীবন সম্পর্কে যারা সচেতন এবং তারা কখনো পার্থিব লোভ-লালসায় নিমজ্জিত জীবন যাপন করতে পারে না; কিন্তু ইয়াহূদীদের অবস্থা এর সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল এবং এখনো আছে।





﴿وَلَن يَتَمَنَّوۡهُ أَبَدَۢا بِمَا قَدَّمَتۡ أَيۡدِيهِمۡۚ وَٱللَّهُ عَلِيمُۢ بِٱلظَّٰلِمِينَ ٩٥ ﴾ [البقرة: ٩٥]





৯৫. আর তারা কখনো তা কামনা করবে না, তাদের হাত যা পাঠিয়েছে তার কারণে। আর আল্লাহ যালিমদের সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত।





﴿وَلَتَجِدَنَّهُمۡ أَحۡرَصَ ٱلنَّاسِ عَلَىٰ حَيَوٰةٖ وَمِنَ ٱلَّذِينَ أَشۡرَكُواْۚ يَوَدُّ أَحَدُهُمۡ لَوۡ يُعَمَّرُ أَلۡفَ سَنَةٖ وَمَا هُوَ بِمُزَحۡزِحِهِۦ مِنَ ٱلۡعَذَابِ أَن يُعَمَّرَۗ وَٱللَّهُ بَصِيرُۢ بِمَا يَعۡمَلُونَ ٩٦ ﴾ [البقرة: ٩٦]





৯৬. আর তুমি তাদেরকে পাবে জীবনের প্রতি সর্বাধিক লোভী মানুষরূপে।১২৮ এমনকি তাদের থেকেও যারা শির্ক করেছে। তাদের যে কেউই কামনা করে, যদি হাজার বছর তাকে জীবন দেওয়া হত! অথচ দীর্ঘজীবী হলেই তা তাকে আযাব থেকে নিষ্কৃতি দিতে পারবে না। আর তারা যা করে আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।





১২৮. আল-কুরআনের মূল শব্দে এখানে على حياة বলা হয়েছে। এর মানে, কোনো না কোনোভাবে বেঁচে থাকা; তা যে কোনো ধরনের জীবন হোক না কেন, সম্মানের ও মর্যাদার বা হীনতার, দীনতার, লাঞ্ছনা-অবমাননার হোক না কেন, তার প্রতিই তাদের লোভ।





﴿قُلۡ مَن كَانَ عَدُوّٗا لِّـجِبۡرِيلَ فَإِنَّهُۥ نَزَّلَهُۥ عَلَىٰ قَلۡبِكَ بِإِذۡنِ ٱللَّهِ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ وَهُدٗى وَبُشۡرَىٰ لِلۡمُؤۡمِنِينَ ٩٧ ﴾ [البقرة: ٩٧]





৯৭. বল, ‘যে জিবরীলের শত্রু হবে১২৯ (সে অনুশোচনায় মরুক) কেননা নিশ্চয় জিবরীল তা আল্লাহর অনুমতিতে তোমার অন্তরে নাযিল করেছে১৩০, তার সামনে থাকা কিতাবের সমর্থক১৩১, হিদায়াত ও মুমিনদের জন্য সুসংবাদরূপে’।১৩২



Recent Posts

Muhammad - Thiên Sứ C ...

Muhammad - Thiên Sứ Của Allah Là Ai? 1

(៧) គោរពសហាបះ របស់ព្យ ...

(៧) គោរពសហាបះ របស់ព្យាការីមូហាំម៉ាត់ ﷺ

সালাত সালাত সংযুক্তি ...

সালাত সালাত সংযুক্তি

আল-কুরআনের সংক্ষিপ্ত ...

আল-কুরআনের সংক্ষিপ্ত তাফসীর: ৩য় পর্ব [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৮৩-১৪১] 1